Uncategorized

করোনা ভাইরাস (কোভিড১৯) সংক্রান্ত – পরিস্থিতি সম্পর্কে

২৬ মার্চ, ২০২০

১। ভাইরাসটি দেশে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ার আলামত দেখা যাচ্ছে।

সরকার এ ভয়ংকর ভাইরাস প্রতিরোধে সত্যিকার কোনো ব্যবস্থা প্রথমদিকে গ্রহণ করেনি। তাদের গণবিরোধী ও প্রতিক্রিয়াশীল চরিত্র ও গণবিচ্ছিন্নতার জন্য যেগুলোর অনেককিছু তাদের পক্ষে বাস্তবায়ন করা সম্ভবও নয়। তথাপি তাদের অবস্থান থেকেও তাদের যা কিছু করা সম্ভব ছিল সেগুলো করতেও তারা শোচনীয়ভাবে ব্যর্থ হয় তাদের স্থ‚ল ও ফ্যাসবিাদী গোষ্ঠীস্বার্থ ও গণস্বার্থ বিষয়ে উদাসীনতার কারণে।

তবে নিজেরাও গুরুতর ঝুঁকিতে আতঙ্কিত হয়ে পড়া, ক্ষমতা টিকিয়ে রাখা এবং মারাত্মক বিপর্যয় থেকে রক্ষা পাবার জন্য সময় পেরিয়ে যাবার পর কিছু কিছু পদক্ষেপ তারা নিয়েছে ও নিচ্ছে। সুযোগ থাকলে এই গণবিরোধী শাসকশ্রেণি, সরকার ও রাষ্ট্রযন্ত্রের কর্তাব্যক্তিরা নিজেরা ও তাদের পরিবার-পরিজন বিদেশে পাততাড়ি গুটাতো। কিন্তু বিদেশে তাদের প্রকৃত আবাসভ‚মিগুলোই বেশি সংকটগ্রস্থ হওয়ায় তারা দেশে থাকতে বাধ্য হচ্ছে। এবং শুধু নিজেদের মঙ্গল চিন্তা থেকে, জনগণকে বুঝ দেয়ার জন্য এবং জনগণকে দাবিয়ে রাখার জন্যই কিছু পদক্ষেপে বাধ্য হচ্ছে।

কিন্তু তাদের পদক্ষেপগুলোতেও ব্যাপক ঘাটতি এবং প্রয়োগে গুরুতর ব্যর্থতা লক্ষ করা যাচ্ছে। অন্তত ২৫ তারিখ পর্যন্ত তাদের প্রকৃত ইতিবাচক পদক্ষেপের তুলনায় হম্বিতম্বিই দৃশ্যমান ছিল।

২। প্রথমত, প্রস্তুতির জন্য প্রায় দুইমাস সময় পেয়েও কার্যত ভাল কোনো প্রস্তুতিই তারা নেয়নি। তারা ব্যস্ত ছিল মুজিব-বর্ষ পালন নিয়ে। এমনকি তারা ২০ তারিখ পর্যন্ত নির্বাচন-কার্যক্রমও চালিয়ে গেছে। কতটা বেকুফ ও অপদার্থ হলে তারা এটা করতে পারে! তারাÑ

বিদেশ ফেরত প্রবাসীদের সরকারি ব্যবস্থাপনায় কোয়ারেন্টিনে না রেখে সারা দেশে ছড়িয়ে পড়তে দিয়েছে। এমনকি তাদের প্রবেশ পথে পরীক্ষাটা পর্যন্ত ঠিকভাবে করেনি। প্রধানমন্ত্রী তার ২৫ তারিখের ভাষণে এ বিষয়ে নির্জলা মিথ্যা কথা বলেছে।

পরীক্ষার জন্য তারা শেষ মুহূর্ত না আসা পর্যন্ত কিট সংগ্রহ করেনি। এখনো পর্যন্ত পর্যাপ্ত কিট নেই, সেগুলোর বন্টনও হাসপাতালগুলোতে সেভাবে হয়নি।

আক্রান্তদের জন্য পৃথক হাসপাতাল প্রস্তুত রাখেনি।

হাসপাতাল ও চিকিৎসা-কর্মীদের পৃথক ট্রেনিং দেয়নি। তাদের সুরক্ষার ব্যবস্থাগুলো গ্রহণ করেনি। তাদের উদ্বুদ্ধকরণ কার্যক্রম গ্রহণ করেনি। এখনো পর্যন্ত স্বাস্থ্য-কর্মীদের সুরক্ষা-সরঞ্জাম বহু জায়গায় যায়নি।

ঢাকার বাইরে পরীক্ষা, কোয়ারেন্টাইন বা চিকিৎসার কোনো ব্যবস্থাই তারা তখন করেনি।

মৃতদের সঠিক সৎকারের কোনো ব্যবস্থা তারা করে রাখেনি। সৎকারের কাজে নিয়োজিতদের কোনো ট্রেনিং বা সম্মানীর ব্যবস্থা করেনি।

উপরোক্ত সবগুলো বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী তার ভাষণে মিথ্যা কথা বলেছে।

শেখ হাসিনার সঠিক পদক্ষেপের কারণে দেশে করোনা তেমন ছড়ায়নি এ জাতীয় বাগাড়ম্বরপূর্ণ খেলো কথাবার্তা বলতেও আওয়ামী নেতারা লজ্জা বোধ করেনি।

দ্বিতীয়ত, কিছু পরে হোম কোয়ারেন্টাইনের যে পরামর্শ তারা দিয়েছিল তা ছিল অনেকটাই কেতাবী, যা আমাদের দেশের বাস্তবতার সাথে ব্যাপকভাবে বেমানান। নগরগুলোর শ্রমজীবী মানুষেরা যে ভাড়া বাসাগুলোতে থাকেন সেগুলো কোনোভাবেই হোম কোয়ারেন্টিনের জন্য উপযোগী নয়। দেশের পরিস্থিতি অনুযায়ী সুনির্দিষ্ট করণীয় নির্দেশ করতে তারা ব্যর্থ হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী তার ভাষণে একদিকে জনগণকে ঘরে থাকতে বলেছে, অন্যদিকে তাদেরকে গ্রামে ফিরে যাবার পরামর্শ দিয়ে ও ভাসানচরে পাঠানোর ঘোষণা দিয়ে তাদের সাথে চরম মশকরা করেছে। বাস্তবে তারা নগরগুলো, বিশেষত ঢাকাকে নিরাপদ করতে চাচ্ছে নিজেদের নিরাপত্তার স্বার্থে।

তারা জনসমাবেশপূর্ণ কাজকে নিষিদ্ধ করেছে অনেক পরে, আধখেচড়াভাবে, ঠেকে ঠেকে। এখনো পর্যন্ত মসজিদগুলোর নামাজকে বন্ধ করার সাহস পর্যন্ত না দেখিয়ে ধর্মবাদীদের প্রচার ও তৎপরতার কাছে নতি¯^ীকার করেছে। প্রধানমন্ত্রীর ভাষণে ঘরে থাকার নসিহত করেছে, অথচ ২৫ মার্চেও গার্মেন্টগুলো বন্ধ রাখা, শ্রমিক-কর্মচারীদের পাওনা শোধ ও বন্ধকালীন তা নিশ্চিত করার ঘোষণা দিতে ব্যর্থ হয়েছে।

তৃতীয়ত, মতাদর্শগতভাবে জনগণকে প্রস্তুত করতে তারা শোচনীয় ব্যর্থতা ও প্রতিক্রিয়াশীলতার পরিচয় দিচ্ছে। ধর্মবাদী প্রচারগুলোকে নিয়ন্ত্রণ করেনি। গ্রামে-গঞ্জে-মফস্বলে-দরিদ্র/শ্রমজীবী বেল্টগুলোতে ব্যাপকভাবে ধর্মবাদী/অবৈজ্ঞানিক প্রচার চলছে। প্রথমদিকে প্রচার করা হয়েছে যে, পশ্চিমা দেশগুলোতে কাফেরদের (অমুসলিমদের) উপর আল্লাহ গজব দিয়েছে। বাংলাদেশে আল্লাহর রহমত আছে বলে করোনা আসেনি। পরে দোয়া পড়াকে উৎসাহিত করা হয়েছে। আল্লাহ যখন মরণ রেখেছে তখন হবেই ইত্যাদি বলা হচ্ছে। এর পাশাপাশি থানকুনি পাতা, পানি পড়া, পীর-কবিরাজ এসবেরও প্রচার ও কার্যক্রম চলছে। আল্লাহ মানুষের ঈমান পরীক্ষা করছে, আল্লাহ যা করে মানুষের ভালর জন্যই করে, মসজিদে গেলে করোনা সংক্রমণ হবে না এসবও বলা হচ্ছে। এসবকে প্রতিরোধের কোনো সত্যিকার ব্যবস্থা সরকার, রাষ্ট্র, সরকারি দল করেনি, বরং এসবকে অনেকক্ষেত্রে মদদ দিয়েছে।

৩। যখন দেশের বিভিন্ন এলাকায় করোনার প্রাদুর্ভাব দেখা গিয়েছে, তখন হঠাৎ করে ‘বন্ধ’ বা ‘ছুটি’ সিস্টেম চালু করেছে। এগুলোর নামে কার্যত ‘ব্লক’-এর এক তামাশা করছে। এ অবস্থায় ব্যাপক মানুষ নগর ও শহরগুলো থেকে গ্রামমুখী হয়েছেন, দেশের সর্বত্র ছড়িয়ে পড়েছেন যার পরিণতি ভয়াবহ হতে পারে। এমনকি তাদের যাত্রাকালে ‘বন্ধ’র এমন এক আতঙ্ক চেপে বসেছিল যে, তারা দলে দলে বাসটার্মিনাল, নৌ-বন্দর, ট্রেনস্টেশন, ফেরি-লঞ্চ-স্টিমারে ভিড় করে গ্রামে গিয়েছেন, যা করোনা সতর্কতার সরকারি নির্দেশগুলোকে একেবারে অকার্যকর করে দিয়েছে।

এই চাপে পড়ে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য (বিশেষত চাল, ডাল) বেড়ে গিয়েছে, যা এখনো অনেক ক্ষেত্রে বজায় রয়েছে। রাষ্ট্র ও সরকার এ সম্পর্কে যেসব কথাবার্তা বলেছে ও বলছে সবই বাগাড়ম্বর ও অকার্যকর প্রমাণিত হয়েছে।

হঠাৎ করে দশদিনের বন্ধ চালু করায় অপ্রাতিষ্ঠানিক শ্রমিক/শ্রমজীবীরা গুরুতর সংকটে পড়েছেন। করোনার চেয়ে তারা তাদের আশু জীবিকা নিয়েই বেশি শঙ্কিত। চাল ও অর্থ দেয়ার যে ঘোষণা দেয়া হয়েছে সেগুলো যে ব্যাপক অর্থে কাজেই আসবে না সেটা বলাই বাহুল্য।

যে ৫ হাজার কোটি টাকা রফতানিমুখী শিল্পের জন্য অনুদান ঘোষণা করা হয়েছে সেগুলো গার্মেন্ট মালিকরা কীভাবে ব্যয় করবেন বা শ্রমিক-কর্মচারীরা কীভাবে তা থেকে উপকৃত হবেন তারও কোনো দিক-নির্দেশনা নেই।

দুধ, ডিম, সব্জিসহ পচনশীল দ্রব্যের উৎপাদকসহ ছোট দোকানদার, ব্যবসায়ীদেরকে কীভাবে রক্ষা করা হবে, বিশেষত উৎপাদনকে কীভাবে বাঁচানো যাবে তারও কোনো নির্দেশনা নেই। জনগণ ‘ব্লক’ অবস্থায় কীভাবে এসব দ্রব্য পাবেন তারও কোনো ব্যবস্থা নেই।

বহু দেশ এ অবস্থায় বন্দিদের ব্যাপকভাবে মুক্তি দিলেও শুধু খালেদার মুক্তি ছাড়া এ সম্বন্ধে কোনো ব্যবস্থাই এখনো পর্যন্ত গ্রহণ করা হয়নি। অথচ, কারাগারগুলো করোনা আক্রান্ত হলে সেগুলোতে ভয়াবহ অবস্থার সৃষ্টি হতে পারে।

হাসিনা তার ভাষণে ধনী-ব্যক্তিদেরকে করোনা-ফান্ডে দান করার জন্য মৃদৃ ও ভদ্র আহবান রেখেছে। অথচ কোটি কোটি টাকা লুটপাটকারী আওয়ামী ধনীদের খুব একটা সাড়া এ পর্যন্ত পাওয়া যায়নি। ব্যক্তি-উদ্যোগগুলো কীভাবে সমন্বিত হবে তারও কোনো নির্দেশনা নেই।

৪। এই বিপর্যয়কে মোকাবিলার ক্ষেত্রে তারা ব্যাপক জনগণের উপর নির্ভর না করে, তাদেরকে সংগঠিত না করে, দেশীয় বিজ্ঞানী ও জনগণের সৃজনশীলতা, সাহস, ত্যাগ, আত্মবলিদানের মনোভাবের উপর ভরসা না করে, ডাক্তারসহ ¯^াস্থ্য-কর্মীদেরকে সংগঠিত ও অনুপ্রাণিত না করে নির্ভর করছে গণবিরোধী ও দেশবিরোধী আমলাতন্ত্রের উপর, বাহিনীগুলোর উপর, এবং বিদেশের উপর। যারা ‘ব্যবস্থা গ্রহণে’র নামে জনগণের উপর নিত্য-নতুন নিপীড়ন ডেকে আনে মাত্র। ইতিমধ্যেই ‘বন্ধ’র নামে ছোট ব্যবসায়ী, দোকানদার, ক্ষুদে উৎপাদক জনগণের জীবনে অত্যাচার নামিয়ে আনা হচ্ছে। এমনকি পথে-ঘাটে প্রয়োজনীয় চলাফেরা, প্রয়োজনীয় বিক্রিবাটা ও কেনাকাটা এবং জরুরি চিকিৎসা পর্যন্ত মানুষ করতে পারছেন না। করোনার পরীক্ষা বা চিকিৎসার জন্য মানুষকে অজস্র হয়রানি ও ভোগান্তির মুখে পড়তে হচ্ছে।

গত ২৫ মার্চ থেকে সেনাবাহিনী নিয়োগের সিদ্ধান্ত হলো একদিকে সরকারি বেসামরিক প্রশাসনের ব্যর্থতার পরোক্ষ স্বীকৃতি, অন্যদিকে পরিস্থিতি শাসকশ্রেণির আয়ত্বের বাইরে চলে যাওয়ার সম্ভাবনাকে ঠেকানোর কৌশল।

বিশেষত, গার্মেন্ট ও অন্যান্য অপ্রাতিষ্ঠানিক শ্রমিক এবং সাধারণ জনগণের বিক্ষোভ ও বিদ্রোহের সম্ভাবনার প্রেক্ষিতে তাদেরকে ভয় দেখানো, তাদেরকে গ্রামে সরিয়ে দেয়া এবং প্রয়োজনে তাদেরকে দমানোর একটা বড় উদ্দেশ্য রয়েছে এই পদক্ষেপে।

কিছু সেলিব্রেটি, এমনকি শেখ হাসিনা পর্যন্ত তার ভাষণে জনগণকে ‘ঘরে থাকার যুদ্ধ’ করতে বলেছে। অথচ জনগণকে সতর্কতা রক্ষা করে সমস্যা মোকাবিলায় সাহসের সাথে এবং আত্মবলিদানের মনোভাব দ্বারা যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়বার কোনো দিক-নির্দেশনা তারা দিতে পারেনি। কারণ, তারা হলো চরম দুর্নীতিবাজ ও লুটেরা, সুবিধাবাদী ও আত্ম¯^ার্থপরায়ণ, যারা জনগণের উপর নিপীড়নকারী, শোষক ও গণবিচ্ছিন্ন। শুধু ঘরে থাকলে, পরিস্থিতি মোকাবিলায় সংকট আসতে বাধ্য।

তাদের পক্ষে স্বাস্থ্য-কর্মীসহ অসংগঠিত জনগণকে, বিশেষত তরুণদেরকে সচেতন করা, ত্যাগ ও সংগ্রামে অনুপ্রাণিত করা, সংগঠিত করা, বিপুল স্বেচ্ছাসেবী তৈরি করা এবং প্রয়োজনীয় কাজগুলোতে সতর্কতা রক্ষা করে মাঠে নামানোর প্রশ্নই আসে না।

৫। এটা সত্য যে, স্বাস্থ্য-রক্ষায় জনগণের অসচেতনতা রয়েছে। কিন্তু সেজন্য দায়ী রাষ্ট্র, শাসকশ্রেণি, সরকার, সরকারি ও অন্যান্য বুর্জোয়া দল, তাদের সংস্কৃতি ও সমাজ। দুর্যোগে জনগণ হাসিনা, সরকার, আওয়ামী ও অন্য বুর্জোয়া দলÑ এসবের উপর আস্থা করেন না। এটা খুবই যৌক্তিক।

শূন্যতার অবস্থায় জনগণ বাধ্য হয়ে আস্থা রাখেন আল্লাহ, তাবিজ-কবজ, দোয়া-দরুদ, কবিরাজি, নামাজ-কালামÑ ইত্যাদি ইত্যাদিতে। ইতিমধ্যেই মসজিদগুলোতে সাধারণ অবস্থার চেয়ে বেশি করে জনসমাগম লক্ষ করা যাচ্ছে, যার পরিণতি মারাত্মক হতে পারে।

৬। এই সমাজ ও রাষ্ট্র, সা¤্রাজ্যবাদী বিশ্ব-ব্যবস্থা এই দুর্যোগ সৃষ্টির একটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ ও উৎস। একে সম্পূর্ণ বদলে না ফেলে প্রথমত, এমন দুর্যোগ প্রতিরোধ করা সম্ভব নয়, দ্বিতীয়ত, দুর্যোগ এসে পড়লে জনগণকে প্রকৃতভাবে রক্ষা করা সম্ভব নয়। আল্লাহর হাতে জনগণকে ছেড়ে দেয়া, নিজেরা রক্ষা পাওয়া এবং কোনো রকমে পার করাটাই এদের উপায়।

কিন্তু যত দুর্যোগই আসুক, আমাদেরকে সাহসের সঙ্গে এর মুখোমুখি দঁাঁড়াতে হবে। নিজেদেরকে, আমাদের সাথে যুক্ত জনগণকে এবং সাধারণভাবে ব্যাপক জনগণকে রক্ষা করার দিকে মনোযোগ রাখতে হবে। বিশেষত, আমাদের নেতা-কেডার-কর্মীদের রক্ষায় মনোযোগী হতে হবে। একইসাথে বিবিধ ক্ষয়ক্ষতির জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে, যতটা সম্ভব তাকে প্রতিরোধ করতে হবে। জনগণকে বিবিধ প্রশ্নে রাজনৈতিক ভাবে সচেতন করতে হবে, চলমান ব্যবস্থাকে উন্মোচন করতে হবে। যেখানে যতটা সম্ভব জনগণকে সংগঠিত করতে হবে।

৭। এই দুর্যোগ দেশে ও বিশ্বে যে আর্থিক ঘাত-প্রতিঘাত ফেলবে তা মারাত্মক হতে পারে। এটা মোকাবিলা করা চলমান ব্যবস্থা ও পদ্ধতি দ্বারা সম্ভব নাও হতে পারে। বুর্জোয়া বিশ্ব নবতর ফ্যাসিবাদের পথে এর মীমাংসা করার চেষ্টা করবে। জনগণের উপর বোঝা চাপিয়ে দেবে। সংকট থেকে অধিক মুনাফা লাভেরও চেষ্টা করবে। যা আবার জনগণের বহুবিধ মাত্রা ও রূপের সংগ্রামের সৃষ্টি করতে পারে। চলমান অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে অনেক অপ্রত্যাশিত ওলট-পালট ঘটতে পারে। কোথাও কোথাও চলমান রাষ্ট্র-ব্যবস্থা সাময়িক বা দীর্ঘস্থায়ীভাবে, স্থানীয় বা কেন্দ্রীয়ভাবে অকার্যকর হয়ে যেতে পারে।

এসব দিকে আমাদের সচেতন দৃষ্টি রাখতে হবে। এবং যেখানে যেভাবে সম্ভব পরিস্থিতিকে আমাদের পক্ষে আনতে হবে, প্রতিক‚লতাকে অনুক‚লতায় পরিণত করার চেষ্টা রাখতে হবে। আমাদের/জনগণের বিবিধ শক্তি/সামর্থকে বৃদ্ধি/উল্লম্ফনের ধারণা রাখতে হবে।

এটা সচেতন থাকতে হবে যে, অস্বাভাবিক পরিস্থিতি অপ্রত্যাশিত ধরনের সুযোগ নিয়ে আসে। যার সুযোগ শুধু প্রস্তুত মনই গ্রহণ করতে পারে। তাই শুধু আত্মরক্ষা নয়, আক্রমণাত্মক দৃষ্টিভঙ্গি ও মনোভাব থাকতে হবে।

কেন্দ্রীয় কমিটি
পূর্ব বাংলার সর্বহারা পার্টি
করোনা ভাইরাস (কোভিড১৯) সংক্রান্ত